কোন্ সুদূরের চেনা বাঁশীর ডাক শুনেছিস্ ওরে চখা?
ওরে আমার পলাতকা!
তোর
পড়লো মনে কোন্ হারা-ঘর,
স্বপন-পারের কোন অলকা?
ওরে আমার পলাতকা!
তোর জল ভরেচে চপল চোখে,
বলকোন হারা-মা ডাকলো তোকে রে?
ওইগগন-সীমায় সাঁঝের ছায়ায়
হাতছানি দেয় নিবিড় মায়ায়-
উতল পাগল! চিনিস কি তুই চিনিস ওকে রে?
যেন
বুক-ভরা ও গভীর স্নেহে ডাক দিয়ে যায়, ‘আয়,
ওরেআয় আয় আয়,
কেবল আয় যে আমার দুষ্টু খোকা!
ওরেআমার পলাতকা!’
দখিন হাওয়ায় বনের কাঁপনে—
দুলাল আমার! হাত-ইশারায় মা কি রে তোর
ডাক দিয়েছে আজ?
এত দিনে চিনলি কি রে পর ও আপনে!
নিশিভোরেই তাই কি আমার নামলো ঘরে সাঁঝ!
ধানের শীষে, শ্যামার শিসে—
জাদুমণি! বল সে কিসে রে,
তুই শিউরে চেয়ে ছিঁড়লি বাঁধন!
চোখ-ভরা তোর উছলে কাঁদন রে!
তোরেকে পিয়ালো সবুজ স্নেহের কাঁচা বিষে রে!
যেনআচম্কা কোন শশক-শিশু চমকে ডাকে হায়,
‘ওরেআয় আয় আয়—
আয় রে খোকন আয়,
বনেআয় ফিরে আয় বনের সখা!
ওরে চপল পলাতকা।’
কলিকাতা
শ্রাবণ ১৩২৮